সমাজে ন্যায় বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আমরা হযরত উমর (রাঃ) এর খিলাফত থেকে কী কী শিক্ষা লাভ করতে পারি? তোমার পাঠ্য বইয়ের আলোক বিশ্লেষণ করো।
পৃথিবীতে এমন অনেক মহৎ ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটেছে যাদের জীবন চরিত্র অন্যের জন্য আদর্শ।এমনই এক জীবন আদর্শ হলো হযরত উমর (রাঃ)। তিনি ছিলেন মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় খলিফ।৫৮৩ খ্রিস্টাব্দে কুরাইশ বংশের আদি গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ইসলাম গ্রহণের পর তিনি ফারুক অর্থাৎ সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী হিসেবে ভূষিত হন। মাজে ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে হযরত উমর (রাঃ) কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। হযরত উমর (রাঃ) এর খিলাফত থেকে আমারা অনেক শিক্ষা লাভ করতে পারি। যেমনঃ
১. হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর আদর্শ : সমাজে ন্যায় বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে হযরত উমর (রাঃ) তাঁর শাসন ব্যবস্থায় হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর আদর্শকে অনুসরন করতেন। বিচারের মঞ্চে সকলেই সমান যদিও সে অন্যধর্মের হোক না কেন।
২.ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা: হযরত উমর (রাঃ) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ছিলেন খুবই কঠোর। মদ্যপানের অপরাধে তিনি নিজ পুত্র আবু শামাকে শাস্তির মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছিলেন আইনের চোখে সকলেই সমান।
৩. কোমলমতি হৃদয়: হযরত উমর (রাঃ) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় যেমন কঠোর ছিলেন অন্যদিকে তার হৃদয় ছিল কোমল। প্রজাদের অবস্থা দেখার জন্য তিনি রাতের আঁধারে একাকি হাঁটতেন।
৪. কর্তব্যপরায়ণঃ হযরত উমর (রাঃ) ছিলেন এখনজন কর্তব্যপরায়ণ শাসক। তিনি নিজ কাঁধে খাদ্যসামগ্রী বহন করে প্রজাদের মাঝে পৌঁছে দিতেন।
৫.নির্মাতা: হযরত উমর (রাঃ) শুধু এখন শাসক ছিলেন না বরং তিনি একজন নির্মাতাও ছিলেন। তিনি অসংখ্য মসজিদ, বিদ্যলয়, সড়ক, সেতু, হাসপাতাল নির্মাণ করেছিলেন।
৬.সাম্যবাদী: হযরত উমর (রাঃ) এর খিলাফতকালে তিনি বায়তুলমাল থেকে তার জন্য যতটুকু কাপড় বরাদ্দ ছিল ঠিক ততটুকুই তিনি নিতেন। ভৃত্যকে উটের পিঠে রেখে নিজে উটের রশি ধরে জেরুজালেম যাওয়ার মাধ্যমে তিনি সাম্যবাদের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।
এক কথায় হযরত উমর (রাঃ) সরলতা ও কর্তব্যজ্ঞান ছিল তার জীবন আদর্শ। তার খিলাফত থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।